২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা এখনো অনেকের কাছে অজানা, এমন মন্তব্য করেছেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও মানুষ আসল ঘটনা জানতে পারেনি বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ গত বৃহস্পতিবার তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি এসব কথা বলতে পারেননি, কিন্তু এখন তিনি বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব ঘটনা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে মানুষের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। তাই সেই সময় কী ঘটেছিল, তা জানা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
২৫ আগস্ট চালু করা ইউটিউব চ্যানেলে মইন ইউ আহমেদ ২৯ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় সেই ঘটনার বিশদ বিবরণ দেন। তিনি উল্লেখ করেন, সেনাবাহিনীর কিছু অব্যবহৃত অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়ার ব্যাপারে তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে কথা হয়েছিল, কিন্তু তখন বিদ্রোহের কোনো পূর্বাভাস ছিল না।
মইন ইউ আহমেদ জানান, ঘটনার দিন সকালে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। সেনাবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির নির্দেশ দেন, যদিও সরকার রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছিল।
তিনি উল্লেখ করেন, বিদ্রোহীরা বিডিআর গেটগুলোর সামনে আক্রমণ প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেয় এবং সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে। এরপর রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করে, যদিও এর আগেই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তের বিষয়ে বলেন, সরকার তদন্তে তেমন সহায়তা করেনি, তবে তিনি আশা করেন, নতুন সরকার এবং সংশ্লিষ্টরা যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।