পাকিস্তানে ভারতের আক্রমণ (৬ মে ২০২৫) হলো ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালিত একটি একতরফা সামরিক অভিযান, যেখানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের (আজাদ কাশ্মীর) অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ভারতের মতে, এই আক্রমণটি ছিল ‘সুনির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া’ যার লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসী ঘাঁটি, যেখানে ভারতীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। অন্যদিকে পাকিস্তান এই হামলাকে তার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং নিরীহ মানুষের ওপর কাপুরুষোচিত হামলা হিসেবে অভিহিত করেছে।
পটভূমি
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি পর্যটন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকজন নাগরিক নিহত হন। ভারতীয় সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে ভারত মধ্যরাতে “অপারেশন সিঁদুর” নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে।
আক্রমণের বিবরণ
অপারেশনের সময় ও স্থান
হামলাটি সংঘটিত হয় ২০২৫ সালের ৬ মে দিবাগত রাতে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, এই অভিযানে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে অবস্থিত অন্তত নয়টি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। লক্ষ্যবস্তু হিসেবে মূলত কাশ্মীর সীমান্তবর্তী অঞ্চল, কোটলি, বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাঘ এবং মুজাফ্ফরাবাদকে চিহ্নিত করা হয়।
ভারতীয় পক্ষের দাবি
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, আক্রমণের লক্ষ্য ছিল “নন-মিলিটারি প্রিসিশন স্ট্রাইক” যার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের ভিত্তি ধ্বংস করা হয়েছে। ভারত দাবি করে, এই অভিযানে কোনো বেসামরিক বা ধর্মীয় স্থাপনায় আঘাত করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ভারতের দাবি অস্বীকার করে জানায় যে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেসামরিক জনগণের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে শিশুও ছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন, এবং দুটি মসজিদ আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এক ঘোষণায় বলেন, “এই ঘৃণ্য আক্রমণের জবাব দেওয়া হবে,” এবং পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ‘প্রতিটি আঘাতের উপযুক্ত জবাব’ দেবে বলে উল্লেখ করেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং উভয় দেশকে “সর্বোচ্চ সংযম” দেখানোর আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনার প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “এই দুই দেশ বহুদিন ধরে যুদ্ধরত। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। এই সহিংসতা লজ্জাজনক।”
সম্ভাব্য ফলাফল ও উদ্বেগ
এই হামলার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা নতুন করে চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দেয় যে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে এবং এর ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হতে পারে।