শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকের ৬ টি বসতঘর ভেঙে ঘরে থাকা ধান-চাল খেয়ে সাবাড় করেছে বন্যহাতির দল। বুধবার (০৪ জুন) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাঁকুগাও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ৩০-৩৫ টি বন্যহাতির একটি দল এই তান্ডব চালায়।
এদিকে বন্য হাতি তাড়াতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস (৩৮) স্ট্রোক করে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন৷ এছাড়াও আহত হয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক।
বনবিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগী কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যের সন্ধানে প্রায়ই উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে নেমে আসে বন্যহাতির দল। পরে বুধবার রাত ৯ টার দিকে উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাঁকুগাও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় তান্ডব চালায় ৩০-৩৫ টি বন্যহাতির একটি দল। এসময় বন্যহাতির দলটি কৃষক রঞ্জিত ঘোষ,সিন্ধু ঢালু, গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস ও সুমন রবিদাসের ছয়টি বসতঘর ভেঙে ফেলে। পরে ঘরে থাকা আসবাবপত্র গুড়িয়ে এবং ধান-চাল খেয়ে ও ছিটিয়ে নষ্ট করে হাতির দল্টি। এছাড়াও কৃষক রুপেন ঢালুর(৪৫) ২০ শতাংশ জমির আমন বীজতলা পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতির দল৷
এতে বন্যহাতির দলটি বসতঘর ভেঙে কৃষক রঞ্জিত ঘোষের ঘরে থাকা ২০ মণ ধান ও ৫ মণ চাল,সিন্ধু ঢালুর ২০ মণ ধান ও চাল, গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাসের ১৫ মণ ধান ও সুমন রবিদাসের ১৫ মণ ধান এবং চাল খেয়ে ও মাটিতে ছড়িয়ে নষ্ট করে। এসময় ঘরের আসবাবপত্র ও ফ্রীজ ভেঙে ফেলে এবং বাড়ির উঠানে থাকা কাঁঠাল ও আম গাছ ভেঙে ফেলে হাতির দল। এছাড়াও কৃষক রঞ্জিত ঘোষের গোয়াল ঘর ভেঙে একটি গরুকে আহত করে হাতির দলটি।
এদিকে বন্য হাতি তাড়াতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিরঞ্জন রবিদাস (৩৮) স্ট্রোক করে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন৷ এছাড়াও আহত হয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক।
ভুক্তভোগী কৃষক রঞ্জিত ঘোষ বলেন, আমার সারা বছরের খাওয়ুনের ধান চাল আছিলো ঘরে। আত্তি (হাতি) তো ঘর ভাইঙ্গা আমার ঘরের আসবাবপত্রসহ সব শেষ কইরা দিলো।অহন সারা বছর পরিবার লইয়া কি খামু।
সংশ্লিষ্ট নয়াবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে বসতঘর, আসবাবপত্র ও ধান-চাল খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।পাহাড়ে হাতির খাদ্যের ব্যবস্থা করা গেলে সীমান্তের মানুষ একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতো।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলক রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে হাতির দলটি নাঁকুগাও এলাকার পাহাড়ে অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয়েছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে বনবিভাগের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।