পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদের আবুল বাশার তার সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা, হুমকিসহ নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রীয় আছিয়া নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌতুকের ‘মিথ্যা’ মামলা করেছেন বলে অভিযোগ বাশারের।
জানা যায়, আবুল বাশার উপজেলার পানাউল্লাহপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তার সাবেক স্ত্রীর নাম আছিয়া বেগম, যিনি নেছারাবাদ উপজেলার সংগীতকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুল সোবহানের মেয়ে এবং ৪নং আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী।
আবুল বাশারের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রভাবশালী আছিয়া তাকে জোর করে বিয়ে করেন। পরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। তবে বিয়ের পরও আছিয়া বেগম তার আগের স্বামী জাকির হোসেনের সঙ্গেই বসবাস করছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশি হয়রানির মাধ্যমে সাবেক স্বামীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর তিনি আবুল বাশারের কাছে ফিরে আসেন।
এরপর ৩০ মে ২০২২ আছিয়া বেগমের আগের স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে ও নানা কারণে আবুল বাশার তাকে ডিভোর্স দেন। কিন্তু এরপর থেকেই আছিয়ার হয়রানি শুরু হয়। নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলা ও হুমকি দিয়ে তিনি বাশারকে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার পল্টন থানার পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক দ্বিতীয়বারের মতো আছিয়া বেগমকে বিয়ে করতে বাধ্য করে বলে দাবি করেন বাশার। ৩০ মে ডিভোর্সের পাঁচ দিনের মাথায়, ২ জুন ২০২২ পুনরায় তাদের বিয়ে হয়।
আবুল বাশারের অভিযোগ, দ্বিতীয় বিয়ের পরও তিনি নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ২১ সেপ্টেম্বর তিনি পুনরায় আছিয়া বেগমকে ডিভোর্স দেন। তবে ডিভোর্সের পরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। তিনি জানান, মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন আছিয়া।
জানা যায়, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাশারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করা হয়, যার পর তিনি জামিন নেন। পরবর্তীতে, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, পুনরায় একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ ছাড়াও ঢাকার মতিঝিল থানায় ধর্ষণ মামলা এবং পল্টন থানায় আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাশার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আছিয়া বেগমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি বাশার তাকে ১০ লাখ টাকা দেন তবে তিনি সব মামলা তুলে নেবেন। এছাড়াও প্রয়োজনে তিনি বাশারের কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকা করে নেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আবুল বাশার।