Dhaka Reader
Nationwide Bangla News Portal

পাইকগাছায় তীব্র তাপদাহে বেড়েছে শিশু রোগ

62

উপকূলীয় জনপদ খুলনার পাইকগাছায় তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারপর দিনরাতে দীর্ঘ সময় লোডশেডিং মানুষের কষ্টের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রবীণ মানুষরা বলেন এবারই প্রথম এ অঞ্চলে মৌসুমের সর্বোচ্চ গরম অনুভব হচ্ছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে এখানকার মানুষের। অস্বস্তি আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সব বয়সের এবং সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ গরম বিরূপ প্রভাব ফেলেছে দৈনন্দিন জীবন যাপনে। ব্যাহত হচ্ছে সবধরনের কার্যক্রম। গরমে বেড়েছে এসির ব্যবহার। এতে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও তীব্র তাপপ্রবাহে বিপাকে রয়েছে কোমলমতি শিশু-কিশোররা। অস্বাভাবিক তাপমাত্রার ফলে শিশু রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। নবজাতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশু কিশোররা জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া সহ নানা ধরনের শিশু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে গত এক মাসের ব্যবধানে সরকারি হাসপাতাল সহ সবখানেই শিশু রোগী বেড়েছে। একদিকে গরমের অস্বস্তি অপরদিকে শিশু সন্তানদের অসুস্থতার কারণে চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন পিতা-মাতা সহ অসুস্থ শিশুর পরিবারের লোকজন। গত শুক্রবার সকালে শতাধিক অভিভাবক তাদের অসুস্থ সন্তান কে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিকট চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। এ সময় প্রচণ্ড এই গরমের মাঝে শিশু সন্তানদের অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান অনেক অভিভাবকরা।

উপজেলার মসজিদকুড় গ্রামের মতিউর রহমান বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে আমার দুটো বাচ্চাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মির্জা আহসান উদ্দিন জানান, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিশু সন্তানরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ৫ বছরের শিশু কন্যা গত এক সপ্তাহ যাবৎ পেটে ব্যথা বমি জনিত সমস্যায় ভুগছে। একারণে পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তা করছেন বলে তিনি জানান।
হাবিবা বেগম জানান, তার দুই বছরের শিশু সন্তান গত এক মাস প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে অসুস্থ রয়েছে। চিকিৎসার পর ও কোন ভাবেই যেন জ্বর নিরাময় হচ্ছে না। হাবিবা বেগমের মতো অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানের অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এ ধরনের আবহাওয়ায় এবং এমন পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খাওয়া সহ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ কওসার আলী গাজী বলেন, অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়া সহ শিশুরোগ বেড়েছে। এ সময় শিশুরা প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, যা কোন ভাবেই কমানো যাচ্ছে না। খাদ্য ও পানি দূষণের ফলে পানি শূন্যতা দেখা দিচ্ছে, প্রস্রাব কমে যাচ্ছে। প্রস্রাবের ইনফেকশন বাড়ছে, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা, বমি হচ্ছে, চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে, পেটে ব্যাথা, ক্ষুধা মন্দা ও খাবারে অরুচি সহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে শিশুদের।

নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সের শিশু কিশোর রা এধরণের সমস্যায় ভুগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময় সবাই কে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের প্রতি অধিক দায়িত্বশীল এবং যত্নশীল হতে হবে অভিভাবকদের। রৌদ্র সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে। ছায়াশীতল ঠান্ডা স্থানে শিশুদের রাখতে হবে। কাপড়চোপড় কম ব্যবহার এবং প্রয়োজনে সুতির কাপড় চোপড় ব্যবহার করতে হবে। খাওয়া এবং গোসলে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে। পচা, বাঁশি ও বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো যাবে না। শরীরে যাতে ঘাম না বসে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তীব্র তাপপ্রবাহের মতো এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের স্যালাইন, ডাবের পানি ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সহ পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.