জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত উভয়ই দিল্লির এক্সটেনশন হিসেবে কাজ করছে। তার মতে, ভারতপন্থী কোনো দলকে বাংলাদেশের মানুষ রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের প্রয়োজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। দিল্লির প্রভাবাধীন রাজনৈতিক শক্তি কখনোই দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে না।”
বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে তরুণদের এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটি গঠিত হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণরা। তিনি বলেন, “নতুন দলটি হবে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্বকারী শক্তি। আমাদের লক্ষ্য ন্যায়বিচার, সুশাসন ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।”
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে বাংলাদেশপন্থীদের জন্য একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা। দিল্লির এক্সটেনশন, মুজিববাদী ও জামাতপন্থী দলগুলোকে দেশের জনগণ আর রাজনীতিতে দেখতে চায় না। মুজিববাদ ও জামাতি শক্তি উভয়ই ভারতীয় স্বার্থের অনুসারী। আমরা চাই, দেশ স্বতন্ত্রভাবে রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হোক। নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের প্রকৃত অধিকার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
সাক্ষাৎকারে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ‘জিয়াবাদ’ প্রসঙ্গেও ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, “মুজিববাদের মতো ভবিষ্যতে কেউ যেন জিয়াবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের ওপর নিপীড়ন না চালায়, সেটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক ধারাটি এমন কিছু চায় না, যা পরিবারতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখে। জনগণের ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জনগণের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে চায়, যেখানে ব্যক্তিপূজা বা পরিবারতন্ত্রের কোনো স্থান থাকবে না। জনগণের কল্যাণই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।”
বিএনপির সমালোচনা করে পাটোয়ারী বলেন, “যদি বিএনপি জুলাই আন্দোলনের ঘোষণার বিরোধিতা অব্যাহত রাখে, তাহলে বর্তমান সরকারই ভবিষ্যতেও ক্ষমতায় থাকবে। বিএনপির উচিত জনগণের চাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। যদি বিএনপি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বছর যদি নির্বাচন হয়, তবে তা শেখ হাসিনার মতো চাপিয়ে দেওয়া নির্বাচন হবে। জনগণের প্রকৃত সমস্যাগুলো সমাধান না করে নির্বাচন হলে, তা আবারও একতরফা নির্বাচন হিসেবে গণ্য হবে। আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে এবং প্রকৃত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।”