“সমস্যা যখন ঘরে তখন আর কতজনকে বিদায় করা যায়”

“সমস্যা যখন ঘরে তখন আর কতজনকে বিদায় করা যায়”—এই একটি বাক্যেই যেন ফুটে উঠেছে দীর্ঘদিনের জমে থাকা একরাশ ক্ষোভ, যন্ত্রণা আর অসহায়ত্ব। আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারার করা এই মন্তব্যটিই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। স্বামীর বিরুদ্ধে পরনারীতে আসক্তির অভিযোগ তুলে বাসার কাজের মেয়েকে বিদায় করার পর নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি এই উক্তি করেন।

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের অন্যতম পরিচিত এই ইসলামি বক্তাকে ঘিরে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, তার মূলে রয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা। তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ধারাবাহিক চারিত্রিক স্খলন এবং প্রতারণার মতো গুরুতর সব অভিযোগ এনেছেন। একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তিনি তার দাম্পত্য জীবনের যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা এবং সম্পর্কচ্ছেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও অভিযোগের গণ্ডি পেরিয়ে পোস্টটি একজন পাবলিক ফিগারের ব্যক্তিগত ও প্রকাশ্য জীবনের ফারাক এবং অনুসারীদের অন্ধ সমর্থনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। তবে অন্ধ অনুসারীদের সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে বাঁচতে সাবিকুন নাহার তার পোস্টের কমেন্টবক্স বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর অনলাইন জগতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। আদনানের অনুসারী ও সাধারণ নেটিজেনদের মধ্যে তৈরি হয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে বিভক্তি। একপক্ষ আদনানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সাবিকুন নাহারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং তার ডিভোর্সের অতীত টেনে এনে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। অন্যপক্ষ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় সাবিকুন নাহারকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এবং একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের এমন আচরণের স্বচ্ছ তদন্তের দাবি করছেন।

তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের ব্যক্তিগত জীবনের স্বচ্ছতা ও সামাজিক জবাবদিহিতার প্রশ্নটিকে আবারও সামনে এনেছে, যা আগামী দিনগুলোতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Comments (0)
Add Comment