গাজীপুরের শ্রীপুরে বাৎসরিক ছুটির টাকার দাবিতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কারখানর দুই হাজার শ্রমিক। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আটকা পড়েছে শতশত পণ্যবাহী ও গণপরিবহন।
মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে নিয়ে পুলিশ রাবার বুলেটে ছুড়ে, শ্রমিকরাও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের ছুড়া রাবার বুলেটে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ শ্রমিক। অপরদিকে শ্রমিকদের ছোঁড়া ইটপাটকেলে আহত হয়েছে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টরসহ পুলিশের একজন কনস্টেবল।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আনোয়ারা নীট কম্পোজিট কারখানার দুই হাজার শ্রমিক ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের রঙিলা বাজার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের সরিয়ে নিতে চেষ্টা করে এতে শ্রমিক পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষে আহতরা হলেন, গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আ স ম আব্দুর নূর (৫৫), ও কনস্টেবল মো. ইনসান মিয়া (৩২)। আহত শ্রমিকরা হলেন, জামেলা খাতুন (২৮), লিপি আক্তার (৩৪), লিজা আক্তার (২৮), সুমি আক্তার (২৩)।
কারখানার সুয়িং সেকশনের নারী শ্রমিক সুফিয়া আক্তার বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ এই কারখানা আমাদের ছুটির বাৎসরিক টাকা দেয় দিচ্ছি করে এত বছর পার করছেন। এত বছর যাবৎ দ্রব্য মূল্যের দাম বেশি না থাকায় শ্রমিকরা তেমন ভাবে চাপ সৃষ্টি করেনি। কিন্তু বর্তমানে বাসাভাড়া দ্রব্য মূল্যের যে পরিমাণ দাম সেজন্য সামান্য বেতনে আমাদের সংসার চালাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হচ্ছে। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। আমাদের ন্যায্য পাওনার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হলো। আর আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ভাইবোনদের গুলিবিদ্ধ হতে হলো।
আনোয়ার নীট কম্পোজিট কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সায়িম বলেন, কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে কর্মস্থলে এসে দাবি করে তাদের ছুটির বাৎসরিক টাকা দিতে হবে। হঠাৎ করে এত টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এরপর উর্ধতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চলতি মাসে বাৎসরিক টাকা দেয়ার কথা জানালে শ্রমিকরা তা না মেনে রাস্তায় নেমেদ অবরোধ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, আনোয়ারা নীট কম্পোজি মিলের আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল পুলিশ। শ্রমিকদের সাথে কথা বলার সময় শ্রমিকদের অপর একটি পক্ষ পুলিশকে লক্ষ্য করা ইট ছুঁড়ে। এতে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আ স ম আব্দুর নুরের মাথায় আঘাত লেগেছে। তার মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। এছাড়াও আরও একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।