শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বরতা থামছেই না। প্রায় সাত মাস ধরে গাজায় নির্বিচারে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলা চালানো হয়েছে গাজা সিটিতেও। এসব হামলায় ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা সাড়ে ৩৪ হাজার ছুঁইছুঁই করছে। আহত হয়েছেন সাড়ে ৭৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান ও ড্রোন হামলায় নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে তিনজন এবং গাজা সিটিতে দুইজনসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৮৮ জন। আহত হয়েছেন ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামাসের যোদ্ধাদের আক্রমণে ১২০০ জন নিহত হয় ও তারা ২৫৩ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের।

অক্টোবরের ওই দিন থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা হামাসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করার প্রত্যয় জানায়। সবদিক থেকে গাজা অবরোধ করে ভূখণ্ডটির বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

তারপর থেকে প্রায় সাত মাস ধরে ইসরায়েলির বাহিনীর স্থল, আকাশ ও নৌ হামলায় ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের টানা ৪৭ দিনের হামলার পর গত বছরের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই আবারও গাজায় আবার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালানো হচ্ছে।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই অর্ধেকের বেশি। গাজায় ইসরায়েলি হামলার মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।

Comments (0)
Add Comment