শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে শতবর্ষী এক বটগাছকে বাঁচাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার পৌর শহরের মধ্য বাজারের ওই শতবর্ষী বটগাছটি রাতের আঁধারে কেটে ফেলার চেষ্টা করছিল শহরের গোলাম মোস্তফা নামের এক তেল ব্যবসায়ী।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই ব্যবসায়ীর দোকানের সাথেই খাস জমিতে বটগাছটির অবস্থান। সম্প্রতি দোকানের জায়গা সম্প্রসারন করতে টিনের বেড়া দিয়ে আবদ্ধ করে গাছটিকে একটু একটু করে কেটে ফেলা হচ্ছিল। প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে পুরাতন এই বটগাছটিকে কেটে ফেলার নানা প্রক্রিয়া চলছিল। কোনভাবেই গাছটিকে রক্ষা করতে পারছিল না স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। অবশেষে ওই বটগাছটিকে রক্ষা করতে থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
আরও জানা গেছে, পৌরশহরের মধ্য বাজারের ওই বটগাছটির নিচে তেল দোকানী গোলাম মোস্তফা ২০২২ সালে প্রথম ডালপালা কাটেন। পরে পর্যায়ক্রমে দোকানে আবদ্ধ থাকা গাছের গোড়া ও শেকড় কাটতে থাকেন। এমনকি বটগাছটিকে মেরে ফেলার জন্য বিষ প্রয়োগ করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিশায় রিছিল ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত মোস্তফার কাছে গাছ কাটার কারন জানতে চান। তখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ভয়ে ব্যবসায়ী মোস্তফা তাড়াহুড়ো করে সেই গাছের টিনের বেড়া খুলে দেন। আর কখনও এই বটগাছ কাট বেন না মর্মে মুচলেকা দেন তিনি।
ব্যবসায়ী অরুণ চন্দ্র সরকার বলেন, বড় এই বটগাছটি নালিতাবাড়ী শহরের ঐতিহ্য বহন করে। এই গাছের ছাঁয়ায় সেখানকার দোকানগুলোতে গরমকালে অনেক ঠান্ডা থাকে। প্রচন্ড ঝড় তুফানে এই গাছটি দোকানগুলো রক্ষা করে। কিন্তু এখন কাটতে কাটতে প্রায় গাছটিকে মেরে ফেলা হচ্ছে। রাতের আঁধারে গাছটির ডাল কাটা হচ্ছে। এই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন।
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, এই ঘটনা শুনে শতবর্ষী ওই বটগাছটিকে বাঁচানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে উপজেলা ভূমি কার্যালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভূঁইয়া বলেন, বটগাছের ডাল কাটার অভিযোগে গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে ভূমি অফিসের নায়েব বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগটি আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে গোলাম মোস্তফার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আমি এই গাছের ডাল কাটি নি। আমার দোকানে চুরি হওয়ার ভয়ে এই গাছসহ আমি টিনের বেড়া দিয়েছিলাম। রাতের আঁধারে কে বা কারা গাছের ডাল কেটেছে তা আমি জানি না। এটি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ।