লিংক পাঠিয়ে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগে শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

গত দুই বছরে অর্ধশতাধিক ফেসবুক আইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্তত ১৫ জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মো. ফজলে হাসান অনিক নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

২৪ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীকে রোববার ঢাকার উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, অনিক ফেসবুক হ্যাকিংকে ‘পেশার পর্যায়ে’ নিয়ে গেছেন।

সোমবার সিআইডি সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ফেসবুকে বিভিন্ন লিংক পাঠিয়ে আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণে নিতেন অনিক। এরপর মেসেঞ্জারের ব্যক্তিগত কথোপকথন ও ছবি হাতিয়ে নিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন।”

অনিক সরাসরি টাকা নিতেন না; বরং বিভিন্ন সুপারশপে কেনাকাটা করে ভুক্তভোগীদের দিয়ে মূল্য পরিশোধ করাতেন। কখনও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা আদায় করতেন বলেও জানানো হয়।

ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনিককে শনাক্ত করা হয়। তার বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাও ইউনিয়নের নেংটাদাহ গ্রামে। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।

ডিআইজি নজরুল ইসলাম জানান, অনিকের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “গত বছর অগাস্টে ভুক্তভোগীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি লিংক পাঠিয়ে অনিক তার ফেসবুক আইডি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে।”

অনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, কোনো মেয়ের আইডি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তার পরিচিতদেরকেও টার্গেট করতেন তিনি। পরিচিতদের কাছ থেকে লিংক এলে তারা ক্লিক করলেই তাদের আইডিও অনিকের নিয়ন্ত্রণে চলে যেত।

সিআইডির ডিআইজি ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিরাপত্তা বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, “ভার্চুয়াল জগতে কোনও কিছুই ‘ব্যক্তিগত’ নয়। যাচাই না করে কোনও লিংকে ক্লিক করা উচিত নয়।”

অনিকের মোট হাতিয়ে নেওয়া টাকার পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে এক লাখ টাকার মত হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে, আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

ভুক্তভোগীদের জন্য আইনি পরামর্শ দিয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, “প্রত্যক্ষ অভিযোগ না থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের আদালতে পিটিশন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।”

Comments (0)
Add Comment