মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য কমিশনাররা তাদের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন এবং রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করার জন্য পরিকল্পনা করেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করা এই কমিশনটির মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা। তবে তাদের অধীনেই অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, নির্বাচন বর্জন করে এবং নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে।
এমন এক সময়ে আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের ঘটনা ঘটল, যখন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্রতর হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নতুন সরকারের অধীনে প্রশাসনে পরিবর্তন আসায় নির্বাচন কমিশনের ওপরও সংস্কারের চাপ বৃদ্ধি পায়।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আউয়াল কমিশন তাদের ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সাথে দেখা করার চেষ্টা করলেও তারা তাতে সফল হয়নি। ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এই পদত্যাগের মাধ্যমে দেশটির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের গঠনের পথে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজেদের অবস্থান ও করণীয় জানতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় আউয়াল কমিশন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মতো ইসির সংস্কার করা হবে বলে নিশ্চিত করছেন তারা। সে জন্য বেশ কয়েকদিন ধরেই তারা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা অফিস করলেও তাদের বিদায়ের প্রস্তুতিই প্রাধান্য পায়। শেষ সময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জরুরি কাগজপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে নেন তারা।