ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শেষ। সাত ধাপে টানা দেড় মাস ভোটগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা পর্ব। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৮৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করে।
এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পাশে নিজের নামটি খোদাই করতে চলেছেন তিনি।
ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৮৬ আসন পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২০২টি আসন। বিজেপি একা সরকার গঠনের জন্য ২৭২ আসনের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। দলটি পেয়েছে ২৪০ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি। এর অর্থ, বিজেপিকে সরকার গড়তে হলে নির্ভর করতে হবে প্রধানত দুই শরিক নীতীশ কুমারের জেডি–ইউ ও অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) ওপর। এই দুই দলের সম্মিলিত আসন ২৮টি।
গতকাল বিকেলে দলীয় দপ্তরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে পাশে নিয়ে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। পুরো নির্বাচনটাই বিজেপি লড়েছিল মোদির নামে। যাবতীয় গ্যারান্টিও দিয়েছিলেন মোদি। এটা ছিল তার পক্ষে অথবা বিপক্ষের গণভোট। জনতা মোদির বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।
খাড়গে ও রাহুল দুজনেই জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বুধবার (আজ)। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
এবারে ভারতের সংসদে বিরোধীদের উপস্থিতি সোয়া দুই শর বেশি হওয়ায় অর্ধেক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের পদ তাদের দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, গত পাঁচ বছর হীনবল বিরোধীদের যে দাবি মোদি কর্ণপাত করেননি, তা এবার মেনে নিয়ে লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের পদটি দিতে হবে বিরোধীদের। ৯৯ আসন পাওয়া কংগ্রেসকে দিতে হবে বিরোধী নেতার পদ, যা পেতে গেলে ৫৫ আসন জিততে হয়। গতবার যা ছিল মোদির দাক্ষিণ্য।
এর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি একাই ৩০২টি আসনে জিতেছিল। এরমাধ্যমে তারা দেশটিকে এককভাবে সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। তবে এবার আর এমন ম্যাজিক দেখাতে পারেনি হিন্দুত্ববাদী দলটি।
কিন্তু বিজেপি তাদের ‘এনডিএ’ জোটে থাকা দলগুলোকে নিয়ে খুব সহজেই সরকার গঠন করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারতে কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৭২টি আসনে জয় পেতে হবে। এই সংখ্যা যদি কোনো দল না পায় তাহলে তারা জোট গঠন করে সরকার গঠন করতে পারবে।