বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হেনস্থা, অপমান এবং পদত্যাগের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকি তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জানান, শিক্ষার্থীদের চাপে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা অফিসে পদত্যাগ পত্র পাঠানোতে সন্তুষ্ট না হয়ে সরাসরি তাদের সামনে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিতে থাকে। পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় তিনি তার বাড়ি ছেড়ে অন্য স্থানে চলে যেতে বাধ্য হন।
এ ধরনের ঘটনা শুধু একজন শিক্ষকের ক্ষেত্রে নয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগপন্থী বা আন্দোলনে সক্রিয় না থাকা শিক্ষকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক চন্দ্রনাথ পোদ্দার শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে পড়েছেন, যারা তার ক্লাস বয়কটের হুমকি দিয়েছে এবং স্থায়ীভাবে অবসর নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
শিক্ষকদের বাসায় গিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরকে শিক্ষার্থীরা চাপ দিয়ে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেছে, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের ওপর এই ধরনের নির্যাতন ও হেনস্থার ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কেও একটি বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সম্পর্কের ভীতি এবং আস্থাহীনতা কাটিয়ে উঠা সহজ হবে না।
বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, শিক্ষকরা এখন আতঙ্কে আছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করতে পারতো। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সমস্যার কার্যকর সমাধান দিতে পারেনি।
বিবিসি বাংলা