নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে সড়ক ও জনপদের ক্ষতচিহ্ন

কুমিল্লা, ফেনীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢল ও টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লার ১৪টি উপজেলার অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়। এখন পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও বিপদ পুরোপুরি কাটেনি।

বন্যার প্রভাবে রাস্তা ও ঘরবাড়ির অবস্থা ভীষণ নাজুক। ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার তাহেরা বেগমের ঘরবাড়ি বানের পানিতে তলিয়ে যায়, এবং এখনো তাদের বাড়ির অবস্থা বাসযোগ্য নয়। ঘরের মাটির মেঝে নরম হয়ে গেছে, আর ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। শুধু তাহেরা বেগমই নয়, অনেক পরিবারের একই অবস্থা।

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন গ্রামে বন্যায় সড়কগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। কংক্রিটের সড়কগুলো ভেঙে পড়েছে, আর কাঁচা সড়কগুলো পুরোপুরি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর ফলে অনেক গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে, এবং সেসব এলাকায় ত্রাণ সহায়তাও পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বন্যার কারণে মাছ চাষি ও খামারিরাও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। মনোহরগঞ্জ উপজেলার মাছের খামারগুলোতে বন্যার স্রোতে মাছ ভেসে গেছে। একইভাবে, মুরগি ও গবাদি পশুর খামারগুলোতেও ক্ষতি হয়েছে। পশুদের খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নেই, এবং কিছু পশু খুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয় এবং প্রত্যন্ত এলাকায় সঠিকভাবে বিতরণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে, তবে ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে পুনর্বাসনের কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করার কাজ শুরু হবে পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর। এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।

Comments (0)
Add Comment