নিউজ ডেস্ক:
বন্যার মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতীরের জনপদ। বসতবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। অনেকে ভাঙনের মুখে পড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, রংপুরের মিঠাপুকুর ও ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় ভাঙনের তীব্রতায় দিশেহারা নদীতীরের মানুষ। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মার ঘূর্ণায়মান স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার শিমুলিয়ার ৪নং ফেরিঘাট পদ্মায় বিলীন হওয়ার পর ভাঙন রোধে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তারপরও পুরো ফেরিঘাট এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ভুক্তভোগীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র মতে, দু’দফা বন্যায় ফরিদপুরে ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি বেড়েছে নদীভাঙন। মধুমতির আগ্রাসনে আলফাডাঙ্গার চারটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আলফাডাঙ্গার মধুমতির পাড়ের বাজড়া, চর আজমপুর, চরডাঙ্গা, চাপুলিয়া, চরধানাইড়, শিকিপাড়া, চাপুলিয়া, চরনারানদিয়া, বাঁশতলাসহ ১০টি গ্রাম ভাঙনের হুমকির মুখে। ইতোমধ্যে গোপালপুর-চরডাঙ্গা পাকা সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একই সঙ্গে নদীতে চলে গেছে চাপুলিয়া গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ৬৫টি ঘর, বাজড়া পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, চরআজমপুর গ্রামের প্রায় ৩০টি বাড়িসহ নানা স্থাপনা। ভাঙন রোধে সেখানে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় স্থায়ী বাঁধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প তৈরি করছে।
সূত্র জানায়, গোপালগঞ্জে মধুমতী বিলরুট চ্যানেলের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদহ, উরফি, ইছাখালী ও ধলইতলায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পদ্মার অব্যাহত ভাঙনের কবলে পড়ে দুটি ফেরিঘাটসহ শিমুলিয়া ঘাটের পার্কিং ইয়ার্ডের ৩ লাখ বর্গমিটার বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে গত শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১৫ হাজার বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হলেও পদ্মার স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে পদ্মার ভাঙন শিমুলিয়া ২ নম্বর ফেরিঘাটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তাতে ঝুঁকিতে রয়েছে ২ নম্বর ফেরিঘাট, বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসির স্থাপনাও। গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ভাঙনে শিমুলিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। তার আগে গত ২৮ জুলাই আকস্মিক ভাঙনে শিমুলিয়া ঘাটের ৩নং ফেরিঘাটসহ বিস্তীর্ণ এলাকা পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়।
সূত্র আরো জানায়, সিরাজদীখানে ধলেশ্বরী নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। গত ৪ দিনে নদীতে বিলীন হয়েছে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী ডাকপাড়া গ্রামের প্রায় ১০টি বাড়ি। হুমকির মুখে আরো ৫০ বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মিঠাপুকুরে শুরু হয়েছে ঘাঘট নদীর ভাঙন। তাতে শেষ সম্বল ভিটেমাটি হারিয়ে শত শত পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে।