কক্সবাজারের উখিয়ায় টানা বৃষ্টির কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ৭ জন রোহিঙ্গা ও শিশুসহ ২ জন স্থানীয় শিশু রয়েছে। পৃথক চারটি পাহাড় ধসের ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বুধবার সকালে বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে সকালের মধ্যে ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধসের এসব ঘটনা ঘটে।উদ্ধার কাজ চলছে। এ পর্যন্ত নয় জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে ৮ নম্বর ক্যাম্পে একজন, ৯ নম্বর ক্যাম্পে তিনজন, ১০ নম্বর ক্যাম্পে চারজন এবং ১৪ নম্বর ক্যাম্পে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন-৮ এর অধিনায়ক আমির জাফর বলেন, নিহতদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশি নাগরিক; বাকি সাতজন রোহিঙ্গা।
১০ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন-ব্লক ১০ এর আবুল কালামের ছেলে আবু মেহের (২৫), লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫৭), মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন (৪২) এবংশরিফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি (১৯)।
৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন-চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকার আলী জহুরের ছেলে মো. হোসেন আহমেদ (৫০), ওই ক্যাম্পের আই-৪ ব্লকের আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮) এবংআই-৯ ব্লাকেরমো. জামালের ছেলে মো. সালমান (৩)। ৮ নম্বর ক্যাম্পে নিহত হনবি-৮২ ব্লকের মো. হারেজের ছেলে মো. হারেজ (৪)। আর ১৪ নম্বর ক্যাম্পেউখিয়ার থাইংখালী এলাকার শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২) মারা গেছে।
কক্সবাজারে মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কখনও ভারী, কখনও মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটল। আশ্রয়কেন্দ্রের অনেক বসতি রয়েছে পাহাড় ঘেঁষে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধসে জানমাল এড়াতে লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার সকাল ৬টায় ১০ নম্বর ক্যাম্পের বক্ল সি-৩ এ পাহাড় ধসে চারজন মাটিচাপা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে। রাত ৩টায় ৯ নম্বর ক্যাম্পের আই-৪ এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভোর ৪টার দিকে ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড় ধসে আরও দুজন মারা যান।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, নিহতদের মধ্যেদুজন স্থানীয় বাসিন্দা। এর মধ্যে ৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হোসেন আহমেদ নানা কারণে ক্যাম্পে অবস্থান করতেন। আর ১৪ নম্বর ক্যাম্পে মারা যাওয়া আব্দুল করিমের বাড়ির আশ্রয়কেন্দ্রেরপাশেই। এসব ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের উপ-সহকারীপরিচালক তোফায়েল আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়কক্সবাজারে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।