ইঞ্জিনিয়ার কাকন ষড়যন্ত্রের শিকার, অপপ্রচারের প্রতিবাদ বালু ব্যবসায়ীদের

নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার দিয়ার বাহাদুরপুর বালুমহালের বৈধ ইজারাদার মোল্লা ট্রেডার্সের অংশীদার ইঞ্জিনিয়ার কাকনকে একটি প্রভাবশালী চক্র পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘কাকন বাহিনী’ নামে গণমাধ্যমে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বালুমহাল দখলের একটি গভীর চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, চর মালিক ও নৌকার মাঝি-মাল্লারা। তারা এই মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, পাবনার ঈশ্বরদীর বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে আসছিলেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ে তাদের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নাটোর জেলা প্রশাসন সরকারিভাবে ৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকায় মোল্লা ট্রেডার্সকে বালুমহালটি ইজারা দিলে বৈধভাবে বালি উত্তোলন শুরু হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, বৈধভাবে কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই জাকারিয়া পিন্টু ও তার সহযোগীরা দৈনিক ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন।

তারা দাবি করেন, “চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ইঞ্জিনিয়ার কাকনের বিরুদ্ধে বহুমুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়। পিন্টুর মদদপুষ্ট মুনতাজ ও বেলাল বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা নদীপথে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বৈধ বালুবাহী নৌকা থেকে চাঁদা আদায় শুরু করে এবং মাঝি-মাল্লাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার কাকনের সম্মানহানি করতে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হয়। পরে ‘কাকন বাহিনী’ নামে একটি কাল্পনিক শক্তির প্রচার করা হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই বাহিনীর কোনো অস্তিত্ব নেই। মূলত ইঞ্জিনিয়ার কাকনকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত করে বালুমহাল থেকে উচ্ছেদ করার পথ পরিষ্কার করাই এই অপপ্রচারের মূল উদ্দেশ্য। বারবার প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও এই মিথ্যাচার বন্ধ হয়নি।”

এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সম্প্রতি একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ইঞ্জিনিয়ার কাকনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, কিছুদিন আগে হবির চরে রাইটার লিটন নামের এক ব্যক্তিকে মুনতাজ ও বেলাল বাহিনীর সদস্যরা কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় নিহত লিটনের ভাই বাদী হয়ে জাকারিয়া পিন্টু, মুনতাজ ও বেলালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই ঘটনার সুযোগ নিয়ে, একই দিনে ওই এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় মুনতাজ-বেলাল বাহিনীর দুই সদস্য নিহত হলে, সেই মামলাটিতেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইঞ্জিনিয়ার কাকনকে প্রধান আসামি এবং আরও অনেক সাধারণ ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়। ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, যে ব্যক্তি নিজের বৈধ ব্যবসা রক্ষার জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, তাকেই কীভাবে একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়?

মোল্লা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, “আমাদের বৈধ বালুমহালটি দখল করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এই মিথ্যা মামলা ও ‘কাকন বাহিনী’ নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা এই ভিত্তিহীন অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপসহ প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।”

Comments (0)
Add Comment