তরুণদের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ২৮ ফেব্রুয়ারি

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তরুণদের নেতৃত্বে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় নতুন জাতীয় রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এবং পরে গঠিত ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র সংগঠকরা এ দল তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব ও সদস্য আকরাম হোসেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়া জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবার, দেশি-বিদেশি কূটনীতিকরাও উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সারজিস আলম।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক জনমত জরিপ পরিচালনা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

তিনি জানান, জরিপে অংশগ্রহণকারীরা রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন।

নতুন রাজনৈতিক দল কেমন হওয়া উচিত, এ প্রসঙ্গে মানুষ সততা ও আদর্শের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতন্ত্রের চর্চা, একনায়কতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়টিও জরিপে উঠে এসেছে।

দলের সম্ভাব্য নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেখানে ‘জনতার দল’, ‘নতুন বাংলাদেশ পার্টি’, ‘বিপ্লবী দল’, ‘নাগরিক শক্তি’, ‘বাংলাদেশ বিপ্লবী পার্টি’ ও ‘রিপাবলিক পার্টি’র নাম উঠে এসেছে। প্রতীকের ক্ষেত্রে ‘উদীয়মান সূর্য’, ‘কলম’, ‘বই’, ‘মুষ্টিবদ্ধ হাত’ ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জনের পর মানুষ যে দেশ প্রত্যাশা করেছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। ৯০-এর দশকে সেনাশাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সে শাসনের অবসান ঘটে।

তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন বাংলাদেশের পথচলায় নেতৃত্ব দেবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের বিষয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। প্রথম দফায় আলোচনা ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে নেতা নির্বাচন করা হবে। ভবিষ্যতে দলের কাউন্সিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।

Comments (0)
Add Comment