করোনা টেস্টের ১৫ হাজার ৪৬০ ভুয়া ও জাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে আলোচিত জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, জেকেজি হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল চৌধুরী, অফিস স্টাফ আ স ম সাঈদ চৌধুরী হুমায়ুন কবির ওরফে হিমু, তানজিনা পাটোয়ারী ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের মালিক জেবুন্নেসা রিমা।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট এর কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অন্যান্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।
সূত্র আরও জানায়, বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তার অফিসের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেস্ট ফি হিসেবে প্রতিটি টেস্টের জন্য আনুমানিক ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে ১৫ হাজার ৪৬০টি রিপোর্ট প্রস্তুত করে তা সেবা গ্রহীতাদের নিকট সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া সরকার-ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং লকডাউন চলাকালীন ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন সময়ে লকডাউনের মধ্যে মাত্র ৩ মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিস-এর প্রাইভেট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। যা করোনা টেস্টের টাকা বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬৮/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।