ঢাকা, ২৬ আগস্ট ২০২৪ – রবিবার দাবি আদায়ে সচিবালয় ঘেরাও এবং ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭৭ জন আনসার সদস্য গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার, প্যাডেল-চালিত রিকশার চালকরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে শাহবাগ ছাড়েন, তাঁদের একমাত্র দাবি হলো শহরের মূল সড়কে ইঞ্জিন-চালিত রিকশা চলতে না দেওয়া।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন গ্রুপ নানা দাবিতে আন্দোলনে নামতে শুরু করেছে। অনেকেই সচিবালয় এলাকা এবং মিন্টো রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে অবস্থান নিয়েছেন। রবিবার রাতের সংঘর্ষের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সচিবালয় ও আশপাশের এলাকায় সভা, সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করেছে। তবে সরকার নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি-দাওয়া পেশের আহ্বান জানিয়েছে।
সচিবালয় ঘেরাও করার পর আনসার সদস্যরা উপদেষ্টা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘেরাও করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি আহত হন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আনসার সদস্য নাসির আহমেদ বলেন, “আমরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের মাসিক বেতন ১৬ হাজার ২০০ টাকা, যা সারা বছর পেতে পারি না। আমাদের দাবি ছিল চাকরি জাতীয়করণের, তাহলে একটা বেতন কাঠামো হতো।”
অনেক সরকারি দপ্তরের গাড়ি-চালকরা দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পান, তাদের চাকরি স্থায়ী করার দাবি রয়েছে। সিরাজুল ইসলাম শামীম বলেন, “আমরা বছরের পর বছর ঝুলে আছি। চাকরি স্থায়ী না হওয়া এবং কোনো বোনাস বা ভাতা না পাওয়ার কারণে সমস্যায় রয়েছি।”
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা পদোন্নতি বঞ্চনা ও চাকরি স্থায়ী করার দাবি তুলছেন। বাংলাদেশ বেতারের কর্মচারীরা অস্থায়ীভাবে কাজ করছেন ১০-১২ বছর ধরে, কিন্তু এখনও স্থায়ী হননি। গ্রাম পুলিশরাও তাদের চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
শাহবাগে বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রতিদিন গ্রুপের গ্রুপ আসছে। প্যাডেল-চালিত রিকশা চালকরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, “ইঞ্জিন-চালিত রিকশা মূল সড়কে চলতে পারবে না।”
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা বেতন কমানোর এবং ভিসি পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন। বর্তমানে ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নেই। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একীভূত করার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, “আন্দোলনকারীদের দাবির যৌক্তিকতা আছে। তবে নিয়মতান্ত্রিক পথে দাবি জানানো উচিত। সরকারকে সময় দিতে হবে এবং দাবিগুলোর বাস্তবায়ন পর্যায়ক্রমে করতে হবে।”
ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারে বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় ভিসা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের স্লোগান ছিল, “‘ভারতীয় দালালরা, হুঁশিয়ার, সাবধান … এক দফা, এক দাবি- আমরা ভিসা চাই।”