Dhaka Reader
Nationwide Bangla News Portal

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও অ্যামনেস্টির নিন্দা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান শিক্ষার্থী বিক্ষোভের ঘটনা তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানান তিনি।

“আমরা ঢাকা ও বাংলাদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থী বিক্ষোভের বিষয়ে সচেতন ও পর্যবেক্ষণ করছি, যেখানে দুজন নিহত হয়েছে এবং শত শত আহত হয়েছে,” বলছিলেন তিনি।

তবে মি. মিলার দুইজন নিহত হবার যে তথ্য দিয়েছেন, তা বিবিসি নিশ্চিত করতে পারেনি।

এদিকে, মি. মিলারের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মি. মিলার বলেছেন, “মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা যেকোনো ক্রমবিকাশমান গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য বিষয়। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যেকোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই।”

যারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনাও জানান মি. মিলার।

এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন মঙ্গলবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দুইজনের মৃত্যুর যে দাবি করেছেন, তার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।”

“যাচাই না করে ভিত্তিহীন তথ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এমন মন্তব্য সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে,” বলেন মিজ সাবরিন।

অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়া শাখার ফেসবুক পেজের এক পোস্টে বিবৃতি দিয়ে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য ক্যাম্পাসগুলোতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় তীব্র নিন্দা জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আমরা অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বর্ণনাটি অতীতে অ্যামনেস্টি যে ধরনের সহিংসতার নথিভুক্ত করেছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে বেসামরিক পোশাকে থাকা ব্যক্তিরা হাতুড়ি, লাঠি ও অস্ত্র দেখিয়ে বিক্ষোভে বাধা দেয় এবং বিক্ষোভকারীদের মারধর করে।

পোস্টে আরও লেখা হয়, বাংলাদেশকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন ও নিজস্ব সংবিধানের অধীনে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করতে হবে। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের আরও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। একইসঙ্গে দেশটি চলমান বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানিয়েছে।

সোমবার (স্থানীয় সময়) স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত রয়েছে। ‘এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২ জন নিহত এবং হামলায় শতশত বিক্ষোভকারীর আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।’

কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

মিলার আরও বলেন, মত প্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা যেকোনো বিকাশমান গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার সহিংসতাকে আমরা নিন্দা জানাই।

উল্লেখ্য, কোটাবিরোধী চলমান আন্দোলনে সোমবার দুপুর থেকেই দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ বহিরাগতরা। এ সময় হামলার শিকার আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে (ঢামেক) চিকিৎসা নিতে গেলে জরুরি বিভাগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ হামলা চালানো বহু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া রাতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.