বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এ ভোট গণনা শুরু হয়।
এবার ৫৪৩ আসনে সাত ধাপে লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছিল ভোট পর্ব। শেষ হয় ১ জুন। আজ একযোগে গোটা ভারতের ৫৪৩ আসনে ফল ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টার মধ্যে বোঝা যাবে কোন রাজনৈতিক দল কেন্দ্রে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
এবার একাধিক রাজনৈতিক দল ভোট ময়দানের শামিল থাকলেও মূলত ভারতে নির্বাচন হয়েছে দ্বিমুখী। বিশেষজ্ঞরা যাকে বলছে ‘বাইপোলার ইলেকশন’। একদিকে দেশজুড়ে ছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’ (এনডিএ)। অন্যদিকে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল দেশটির জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স’ (ইন্ডিয়া)। অর্থাৎ দেশবাসী ভোট দিয়েছেন এনডিএ ও ইন্ডিয়া জোটকে।
যদিও এবার ভারতের প্রথম সারির সমীক্ষাগুলো এগিয়ে রেখেছে এনডিএ জোটকে। ফলে সেই সমীক্ষা যদি মিলে যায় টানা তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। আর তা যদি হয় সেক্ষেত্রে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পর নরেন্দ্র মোদি সেই রেকর্ড স্পর্শ করবেন। যদিও বিরোধীদের দাবি, বুথ ফেরত জরিপ তারা বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে ভোটের ফলই তাদের ভাগ্য নির্ণয় করবে। ফলে দুদলের নেতা-কর্মী, সমর্থক সবাই চরম উত্তেজনার মধ্যে রয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের ৪২ লোকসভা আসনের ভোট গণনা হবে ৫৫টি কেন্দ্রে। মূলত একটি রাজ্যের উদাহরণ দিলে ধারণা করা যাবে ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলো কোন প্রক্রিয়া ভোট গণনা শুরু করেছে।
নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে গণনার কাজ সম্পন্ন করতে গণনা কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তায় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রতিটি গণনা কেন্দ্র মুড়ে ফেলা হয়েছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায়। প্রথম দুই বলয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শেষ বলয়ে রয়েছে রাজ্য পুলিশ। প্রতিটা গণনা কেন্দ্রের বাইরে ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
পশ্চিমবঙ্গের ৫৫টি গণনা কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোতায়েন করা হয়েছে ১ হাজার কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী। রয়েছে ২ হাজার ৫২৫ জন রাজ্য পুলিশ। গণনার জন্য ঘর রাখা হয়েছে ৪১৮টি। প্রতিটি ঘরে ১৪টি টেবিল রাখা হয়েছে। একসঙ্গে ১৪টি টেবিলেই খোলা হবে ইভিএম। সব মিলিয়ে বঙ্গে মোট গণনা টেবিল রয়েছে ৪ হাজার ৯৪৪টি।
প্রতিটা গণনা কেন্দ্রে গড়ে ১৭-২৩ রাউন্ড গণনা চলবে। সবচেয়ে বেশি ২৩ রাউন্ড গণনা হবে। অঞ্চলভিত্তিক সবচেয়ে কম গণনা হবে ৯ রাউন্ড। প্রথমে গণনা হবে পোস্টাল ব্যালট। এরপর খোলা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে প্রথম রাউন্ডের গণনার ফলাফল আসতে শুরু করবে।
বেলা গড়ালে ট্রেন্ড বোঝা যাবে কোন পক্ষ দেশজুড়ে এগিয়ে রয়েছে। তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে। বিকেল ৪টার পর মোটামুটি ধারণা বাস্তবে পরিণত হতে থাকবে। তখনই বোঝা যাবে ভারতে কোন রাজনৈতিক দল সরকার গড়তে চলেছে।