ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান রোববারের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দোল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে তারা।
সোমবার সকালে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দুর্গম পার্বত্য এলাকায় হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ হেলিকপ্টারের আরোহীদের সবার মৃত্যু হয়েছে।”
রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি প্রকল্প উদ্বোধনের পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি এবং তার সফরসঙ্গীরা। ঘন কুয়াশার মধ্যে হেলিকপ্টারটি পার্বত্যাঞ্চলে দুর্ঘটনায় পড়ে।
এরপর ৪০ জনের বেশি উদ্ধারকর্মী, অনুসন্ধানী কুকুর এবং ড্রোন দিয়ে শুরু হয় বড় ধরনের উদ্ধার অভিযান। কিন্তু দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কুয়াশার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীদের বেগ পেতে হয়।
পরে সোমবার সকালে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেওয়া একটি তুর্কি ড্রোন ‘হিট সোর্স’ শনাক্ত করলে দুর্ঘটনাস্থলের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু পাহাড়ের উপরে হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান রহোসেইন কোলিভান্দ বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে প্রাণের কোনো চিহ্ন মেলেনি।
রয়টার্স লিখেছে, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি পুড়ে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ড্রোন থেকে তোলা বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে।
রোববার দুর্ঘটনার পর রাইসিকে জীবিত উদ্ধারের আশা ফিকে হতে থাকলে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইরানিদেরকে উদ্বিগ্ন হতে বারণ করেন। দেশের কাজে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। রাইসির জন্য সবাইকে দোয়া করারও আহ্বান জানান।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফারসেও ইব্রাহিম রাইসির জন্য দোয়া করতে বলা হয়। রাষ্ট্রীয় টিভিতে আসা ভিডিওতে মাসাদ শহরে মানুষজনকে প্রেসিডেন্টের জন্য দোয়া করতেও দেখা যায়।
ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি রোববার আরাস নদীর ওপর একটি বাঁধ প্রকল্প উদ্বোধন করতে আজারবাইজান সীমান্তে গিয়েছিলেন। ৬৩ বছর বয়স্ক রাইসি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।