শরিয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুর নেশাখোঁর ছেলেকে সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় ৬৬ বছর বয়সী মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মা আদালতে ছেলেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত ছেলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জরি করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরে ইতালি প্লাজার পাশে একটি গলি থেকে পালং মডেল থানা পুলিশ ছেলে রফিকুল মাদবরকে (৪৫) গ্রেফতার করেন।
জানা যায়, সদর উপজেলার চর গাজীপুর গ্রামের মৃত ছলিমদ্দিন মাদবরের স্ত্রী অজুফা বেগম (৬৬)। স্বামী দুই ছেলে চর মেয়ে রেখে মারা যান। এরপর থেকে অজুফা ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
মামালা সূত্রে ও মা অজুফা বেগম জানান, তার বড় সন্তান রফিকুল (৪৫) ও তার স্ত্রী মাকসুদা (৩৮) একই বাড়ীতে ভিন্ন ভাতে ভিন্ন সংসারে বসবাস করে। আমাকে ভাত কাপড় দেয় না। ছেলে রফিকুল জুয়া খেলে এবং নানা রকম অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। এবং ছেলের বউ গাঁজা, ইয়াবা বিক্রি করে। আসামীগণ যথন তখন আমার নিকট টাকা পয়সা চায়, না দিতে পারলে আমাকে মারধোর করে। আমার মৃত্যুর পূর্বেই আমার নামীয় সম্পত্তি তাদের নামে দলিল করিয়া দিতে হবে। আমি অস্বীকার করলে আসামীগণ আমাকে নানা ভাবে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতে থাকে। এবিষয়ে একাধিকাবার সালিশ দরবার হয়। আমি মান সম্মানের কথা চিন্তা করে আসামীদের সকল অত্যাচার নিরবে সহ্য করে আসতে থাকি। আমি হজ্বে যাওয়ার সময় ১ নং আসামী ছেলে রফিকুলের নিকট টাকা পয়সা চাইলে সে আমাকে বলে যে, তার নামে সমস্ত জমি দলিল করে না দিলে সে আমাকে হজ্ব করতে যেতে এক টাকাও দিবে না। যার ফলে আমি আমার নাতিন জামাইর নিকট হতে টাকা পয়সা নিয়া পবিত্র ওমরা হজ্ব পালন করতে যাই এবং গত ২৩ এপ্রিল রাত ৩ টার সময় বিমানবন্দরে নামী এবং গতকাল সকাল ১০ টার সময় বাড়ীতে আসি।
অতঃপর ২৪ এপ্রিল বিকাল অনুমান ৫ টার সময় আসামী রফিকুল, তার স্ত্রী মাকসুদা ও ভাতিজা পান্নু মাদবর এদের কু-প্ররোচনায় আমার নামীয় জমি তাদের নামে সাফ কবলা দলিল করে দিতে বলে। আমি আমার অন্যান্য সন্তানদের কথা চিন্তা করিয়া ১ নং আসামীকে জমি দলিল করিয়া দিতে অস্বীকার করায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ২ নং আসামী বলে যে, ওকে জমি দলিল করিযা না দিলে পিটাইয়া খুন করে ফেল। এই হুকুম পাইয়া ১ নং আসামী নিজেই আমাকে এলোপাথারী ভাবে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলা ফুলা জখম করে। ২ নং আসামী আমার চুলের মুঠি ধরে টানা হেঁচড়া করে এবং ধাক্কা দিয়া মাটিতে ফেলিয়া দেয়। ৩ নং আসামী আমার পড়নের কাপড় চোপড় টানা হেঁচড়া করে এবং আমাকে এলোপাথারী ভাবে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে জখম করে। আমি কিছুটা সুস্থ্য হয়ে স্থানীয় ভাবে আপোষ মীমাংশার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। পরে স্থানীয় পালং থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে কোর্টের মাধ্যমে মামলা করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আকরাম হোসেন বলেন, মাকে মারধর করায়, মা আজুফা বেগম আদালতে তিন জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত ছেলে রফিকুল মাদবরের নামে ওরেন্টে দিলে তাকে আমরা গ্রেপ্তার করি।কাল ২৬ এপ্রিল আসামিকে কোর্টে চালান করা হবে।