Dhaka Reader
Nationwide Bangla News Portal

স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারার জবানীতে আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের পরকীয়া

এয়ার হোস্টেসদের সেলিব্রিটি পছন্দ, আর সেলিব্রিটিরাও হয়তো এয়ার হোস্টেসদেরই ডিজার্ভ করেন” এই বাক্যটাই যেন আজ আমার জীবনের নির্মম বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের প্রিয় উস্তাদ, আমার স্বামী আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান, এখন তার ১৫ বছরের পুরোনো কলেজ জীবনের এক প্রিয়তমার প্রেমে মজেছেন। সেই নারী, জারিন জেবিন, আজ একজন এয়ার হোস্টেস।

শুনেছি, পনেরোটা বছর আগে আমার স্বামী তাকে পাগলের মতো চাইতেন। কিন্তু পকেটে টাকা ছিল না বলে সেদিন সেই পরিবার তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। আজ দিন বদলেছে, তার খ্যাতি হয়েছে, টাকা হয়েছে। আর সেই সাথে ফিরে এসেছে পুরোনো প্রেম। এখন নাকি সেই নারীই আমার স্বামীকে ফিরে পেতে মরিয়া। তাদের সেই ধুলো জমা প্রেম আজ নতুন করে জেগে উঠেছে, আবেগের সাগরে ভাসছে দুজন। নিয়মিত চ্যাট বক্সে তাদের অনুভূতির আদান-প্রদান হয়। শুধু কি তাই? আমারই ঘরের কোণে বসে, আমার স্বামীর গড়া ‘যিন্নুরাঈন সেন্টারে’ বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলেন তিনি। তার সাথে লং ড্রাইভে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, এমনকি সেন্টারের অফিস রুমে একান্তে দেখাও করেন।

সবচেয়ে কষ্টের বিষয় কি জানেন? আপনাদের দেওয়া টাকায়, আপনাদের ভালোবাসায় যে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে, সেগুলোই আজ তার ব্যক্তিগত অভিসারের কারখানায় পরিণত হয়েছে। যে মানুষটা মিডিয়ার সামনে সহ-শিক্ষার বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন, তারই প্রতিষ্ঠানে আজ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার আয়োজন। বিভিন্ন কোর্সের নামে মেয়েদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করা, আর সেখান থেকে নিজের জন্য ‘সেরা’ কাউকে খুঁজে বের করাই যেন তার অন্যতম কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যখনই আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়েছি, তখনই আমি হয়ে গেছি সবার চোখে ‘জঘন্য’। আমার স্বামী চিৎকার করে আমাকেই দোষী বানিয়েছেন, আমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন মিথ্যে অপবাদের বোঝা। একবার ভাবুন তো সেই স্ত্রীর কথা, যার স্বামী তারই বিছানায় বসে আরেক নারীর সাথে প্রেম করে, আর রাত ৩টায় বাড়ি ফিরে নির্লজ্জের মতো স্বীকার করে, “আমি আমার প্রেমিকার সাথে কথা বলছিলাম।” তিনি কিছুই গোপন করার প্রয়োজন বোধ করেন না, কারণ তার ধারণা তিনিই সবচেয়ে বড়, তার কোনো ভুল হতে পারে না।

এই গল্পটা শুধু একজন এয়ার হোস্টেসকে নিয়েই শেষ নয়। এর আগেও রংপুরের এক আলেমা মেয়ের জীবন জড়িয়েছিল তার সাথে। আমাদেরই এক প্রতিযোগিতার ছাত্রী ছিল মেয়েটি। তাকে ইফতা পড়ানো, দ্বীনের পথে একসাথে চলা, এমনকি বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার পরিবার পর্যন্ত কথা বলেছিলেন আমার স্বামী। কিন্তু যেই পুরোনো প্রেমিকার দেখা মিলল, অমনি সেই আলেমা মেয়েটিকে বলে দিলেন, “ভালো পাত্র পেলে বিয়ে করে নিন।” অথচ সেই বোকা মেয়েটা আজও তার প্রেমে পাগল হয়ে পথ চেয়ে আছে। আমার স্বামী তাকেও কথা দিয়েছেন, বিয়ে করলে তাকেই করবেন। এমন প্রতিশ্রুতির তালিকাটা বেশ লম্বা। শেষ পর্যন্ত তিনি কার হন, সেটা সময়ই বলে দেবে।

এই সবকিছুর পরও আমি চুপ থাকতে চেয়েছিলাম। একবার তো মুখ খুলে আবার সব মুছেও দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, নিজের কাঁধে সব দোষ নিয়ে অপমানিত হয়ে চুপ করে থাকব, যদি সে শুধরে যায়। কিন্তু আমি মিথ্যা বলিনি, নিছক সন্দেহের বশেও কিছু লিখিনি। যখন দেখলাম, ভক্তদের অন্ধ আস্ফালন তাকে শুধরানোর বদলে আরও বেপরোয়া করে তুলছে, তখন আমার আর চুপ করে থাকার উপায় ছিল না। হয়তো আমার এই সত্য প্রকাশ আপনাদের সচেতন করবে, আর তিনি চূড়ান্তভাবে নিজেকে সংশোধন করার একটি সুযোগ পাবেন। আমি জানি, এর জন্য আমাকে অনেক আক্রমণের শিকার হতে হবে, কিন্তু আমি নিজের পরোয়া করি না।

এই মানসিক যন্ত্রণা আর ক্রমাগত চাপে আমার শরীর-মন দুটোই ভেঙে পড়েছে। তাই আপাতত আমার অনলাইন তালিমটি স্থগিত করতে বাধ্য হচ্ছি। আমার আর আমার সন্তানদের, উসমান ও আয়িশার জন্য দোয়া করবেন। আমি একজন গুনাহগার বান্দা, আমার রবের ক্ষমা ও দয়ার কাঙাল।

জবানিতে: সাবিকুন নাহার সারা (আবু ত্বহা আদনানের স্ত্রী)।

সাবিকুন নাহার সারার ফেসবুক প্রোফাইল
সাবিকুন নাহার সারার ফেসবুক প্রোফাইল । ১১ অক্টোবর ২০২৫

Leave A Reply

Your email address will not be published.