গাজীপুরের শ্রীপুরে মা-বোনসহ ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর মরদেহ ভাসে উঠল বাড়ির পাশের পুকুরে। রবিবার সকালে উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত শাহজাহান মিয়া (৩৮) উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামের মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে।
২০১৫ সালে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নির্মম ভাবে খুন করে নিহতের মা বোনকে। এসময় তাকেও প্রচুর পরিমাণ কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছিলো। গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘ দিন চিকিৎসা শেষে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। রবিবার পুকুরে ভাসছে তার মরদেহ এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের ভাই মজিবুর রহমান জানান,শনিবার ভোর ছয়টা থেকে নিখোঁজ রয়েছে সে।
নিহতের ভাই ট্রিপল হত্যা মামলার বাদী মজিবর রহমান জানান , আমার বোন প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ২০১৫ সালে স্থানীয় নাছির উদ্দিনের ছেলে রবিন, ইসলাম উদ্দিনের ছেলে নাঈম, আয়নাল হোসেনের ছেলে ইউসুফ, আব্দুল বাতেনের ছেলে এমরান, রজব আলীর ছেলে রুবেল ও সাকিল গভীররাতে আমার মা বোন ভাই শাহজাহানকে কুপিয়ে মারাত্মক যখন করে। চলে যাওয়ার সময় আমার এক প্রতিবেশী নারী তাদের দেখে চিনে ফেললে ওই নারীকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে ফেলে যায়।
ওই রাতে হাসপাতাল নেয়ার পর আমার মা ও বোন মারা যায়। আর দীর্ঘ দিন চিকিৎসা শেষে ভাই শাহজাহান প্রাণে বাঁচে। ওই ত্রিপল হত্যাকাণ্ডের একমাত্র সাক্ষী ছিল আমার ভাই শাহজাহান । সেও আজ চলে গেল।
তিনি আরও জানান, আমার কলেজ পড়ুয়া বোন আরিফাকে অভিযুক্ত আসামী রবিন প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অভিযুক্তরা গভীর রাতে আমার মা বোনকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে খুন করে। আজ আমার ভাইয়ের মরদেহ পুকুরে ভাসছে, কি ভাবে সে মারা গেলো, কেউ মেরে ফেলছে নাকি তা আমি বলতে পারছি না।
মুজিবুর রহমান আরো জানান, আমার ভাই শাহজাহানের চোখের সামনে আমার মা-বোনকে কুপিয়ে হত্যার সময় থেকেই আমার ভাই অনেকটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি আমার ভাই। আমি ওই মামলারবাদী। হত্যাকারীরা বিভিন্ন সময় আমাকে নানানভাবে হুমকি দিয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন পিবিআই।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।