Dhaka Reader
Nationwide Bangla News Portal

লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া: প্রশ্ন আর উদ্বেগের ভিড়ে রাজনৈতিক জল্পনা

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। এটি তার স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য একটি স্বাভাবিক পদক্ষেপ হলেও, দেশের রাজনৈতিক মহল এবং দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দলের মধ্যে তার শীর্ষ নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকলেও, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা দলকে আরও একটি “চ্যালেঞ্জের মুহূর্তে” ফেলে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং সরকারবিরোধী অবস্থানকে সামনে রেখে খালেদা জিয়ার বিদেশে থাকা দলের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করতে পারে।

ফেরার নিশ্চয়তা: খালেদা জিয়া চিকিৎসার পর দেশে ফিরতে পারবেন কি না।
রাজনৈতিক প্রভাব: খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দেশের বাইরে থাকায় দলের অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব কীভাবে পরিচালিত হবে।
বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এই উদ্বেগগুলোকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন। তাদের মতে, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্যই যাচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে ফিরে এসে নেতৃত্বে অংশ নেবেন।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুই প্রধান রাজনৈতিক নেত্রীর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর চাপের প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে অনেকেই। সেই অভিজ্ঞতা দলীয় কর্মীদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় “মাইনাস টু ফর্মুলা” কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতারা।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়ার বাসায় সাক্ষাৎ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তবে বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ইঙ্গিতের প্রেক্ষাপটে এই সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার একটি পারিবারিক দিকও রয়েছে। দীর্ঘ সাত বছর পর তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান এবং নাতনি জাইমা রহমানের সঙ্গে দেখা করবেন।

চিকিৎসার জন্য প্রথমে লন্ডনের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিরাজনীতিকরণের আলোচনার মধ্যেই খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। বিশেষত, সরকারবিরোধী আন্দোলনের গতি ও দিকনির্দেশনায় এর প্রভাব থাকতে পারে।

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা তার স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য হলেও, এটি রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্ন উত্থাপন করছে। বিএনপি নেতারা যেখানে একে কেবল চিকিৎসার বিষয় হিসেবে তুলে ধরছেন, সেখানে বিশ্লেষকরা মনে করেন এটি বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.