নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবকে (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) বিলুপ্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠিতে এই দাবি জানিয়েছে, যা তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, র্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে বিচারহীনতার সুবিধা পেয়ে আসছে। HRW বাংলাদেশের সরকারের কাছে র্যাবের বিরুদ্ধে সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছে। এছাড়াও, এই বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) নিয়েও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব বিলুপ্তির প্রস্তাব
মানবাধিকার কর্মীদের মতে, র্যাবের ক্রসফায়ার, ঘুষ, চাঁদাবাজি এবং সরকারবিরোধী কর্মীদের গুমের মতো অভিযোগগুলো সংগঠিত হয়েছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে র্যাবের কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন এসেছে। তবে, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন র্যাবকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন, কারণ তার মতে, এই বাহিনী সমাজে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের এলিট ফোর্সের কোনো প্রয়োজন নেই এবং পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করে দক্ষতা বাড়ানো উচিত।
অন্যদিকে, সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, র্যাব বিলুপ্ত না করে সংস্কার করা দরকার। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এম মুনিরুজ্জমানের মতে, র্যাব একটি প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, তবে এর ব্যবহারের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি।
ডিজিএফআই-এর ভূমিকা
ডিজিএফআই নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো আরও উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, এই সংস্থা গুমের ঘটনাগুলোর মূল সমন্বয়কারী এবং সেনানিবাসের বাইরে তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করা উচিত। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মনিরুজ্জামানও মনে করেন, এই সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে এবং সংসদীয় কমিটির কাছে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুসারে।