রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু হলে এই সংখ্যা বাড়ে। এই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ও আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অন্তত ১৬৫ জন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে নাফি নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। তার মৃত্যুতেই নিহতের সংখ্যা ৩২-এ পৌঁছায়।
এর আগে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) ৩১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ২৩ জনই শিশু। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অনেকের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ২০টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ৬টি মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) মর্গে রাখা আছে। নিহত বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা পরিস্থিতি
আইএসপিআরের তথ্যমতে, আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন:
-
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট: ৪৬ জন
-
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: ৩ জন
-
কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল: ৮ জন
-
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ): ২৮ জন
-
লুবনা জেনারেল হাসপাতাল: ১৩ জন
-
উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: ৬০ জন
-
উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল: ১ জন
-
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ: ১ জন
-
ইউনাইটেড হাসপাতাল: ২ জন
-
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: ৩ জন
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তারা হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রয়েছেন। আরও ৩০ জনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের চিকিৎসায় দেশের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদেরও যুক্ত করা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, প্রয়োজনে সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।