Dhaka Reader
Nationwide Bangla News Portal

ভিসি’র পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে মশাল মিছিল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হয়ে প্রধান ফটকসংলগ্ন কুয়েট উড পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখান থেকে মশাল মিছিলসহ শহীদ মিনারে গিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম, ১৯ ব্যাচের শেখ জাহিদ এবং গালিব রাহাত। তারা অভিযোগ করেন, আগামীকাল ১৮ এপ্রিল ভিসি পরিষদের একটি মিটিং রয়েছে। সেই মিটিংয়ে অংশ না নিতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের প্রতি অনুরোধ জানান তারা। তাদের ভাষায়, “যেই ভিসির অধীনে আমাদের রক্ত ঝরেছে, নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে হয়েছে, বহিষ্কার ও মামলা হয়েছে—তার ডাকে সাড়া দেওয়া মানে আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া।”

তারা আরও বলেন, “আমাদের কয়েকজন শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের সাথে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। আমরা পরিষ্কার করে বলছি, আমাদের আন্দোলন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়। তবে আমরা ব্যথিত, কারণ দুই মাস পেরিয়ে গেলেও যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন করেননি শিক্ষকরা।”

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি মো. আতাউর রহমান মোড়ল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, অথচ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী হিসেবে এখনো চাকরিতে বহাল আছেন। “রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও তিনি কীভাবে চাকরিরত? কার ইন্ধনে তিনি শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন?”—প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা।

তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি, যারা এই আন্দোলনে তাদের সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।

তারা বলেন, “৫৮ দিন পার হয়ে গেলেও ইন্টারিম সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। ক্যাম্পাসে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, রামদা, চাপাতি নিয়ে হামলার পরও নিরব থেকেছে তারা। আসিফ মাহমুদের জন্য আমরা আন্দোলন করেছি, কিন্তু তিনিও আমাদের পাশে আসেননি। আমরা এখনও রাজপথে আছি। প্রয়োজনে আবারও ‘জুলাই’ ফিরিয়ে আনব।”

প্রসঙ্গত, কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যেখানে অর্ধশতাধিক আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চলমান আন্দোলনের মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে ১০১তম সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম ও ২ মে হল খোলার ঘোষণা দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এবং আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.