গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে জমি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মোঃ আশরাফুল ইসলাম খান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন ভোগড়া এলাকায় জাল দলিলের মাধ্যমে আত্মসাতকৃত ৮ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করতে এবং জাল দলিল বাতিল সহ ন্যায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ইকবাল গাজীপুরের বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি গত ২৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে দেওয়ানী মুকাদ্দমা নং ১৬৭/২০২৫ হিসেবে দায়ের হয়। সংশ্লিষ্ট দলিল নম্বর ৬২০৯।
অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম খান গাজীপুর সদর উপজেলার পিরু জালি গ্রামের মোঃ আব্দুল গফুর খানের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জীবিত থাকা অবস্থায় জালাল উদ্দীনের মালিকানাধীন ভোগড়া মৌজার ১১৯২ আরএস ১৬৫৫ দাগের ৮ শতাংশ জমিতে নির্মিত একটি একতলা ভবন ও টিনসেড গোডাউন অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলামের নিকট ২০০৭ সালে মাসিক যুক্তিতে ভাড়া দেন। জালাল উদ্দীনের মৃত্যুর আগপর্যন্ত ভাড়াটিয়া আশরাফুল নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে আসছিলেন। ২০১৯ সালে জালাল উদ্দীন মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর পর তার সন্তানদের নিকটও ভাড়া প্রদান অব্যাহত রাখেন।
তবে ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে আশরাফুল ইসলাম মাসিক ভাড়া প্রদানে গড়িমসি শুরু এবং কালক্ষেপণ করতেন থাকেন। দীর্ঘদিনের পুরাতন ভাড়াটিয়া থাকায় আশরাফুলের ভাড়া প্রদানে গড়িমসি এবং কালক্ষেপণ সংক্রান্তে তেমন কিছুই বলেন নি বাদীপক্ষ। একপর্যায়ে ডিসেম্বর মাসে বাদী পক্ষ গোডাউনের তালা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আশরাফুল ১০/১২ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জোরপূর্বক দখল নেন এবং নির্মাণকাজ শুরু করেন। বাদীপক্ষ নির্মাণকাজে বাধা দিলে তিনি দাবি করেন, জমিটি তিনি জালাল উদ্দিনের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন।
মামলায় আরো বলা হয়, আশরাফুল দলিল রেজিস্ট্রি দেখান ২০০৮ সালের ১১ মার্চ, অথচ দলিলে জালাল উদ্দিনের বয়স ৭০ বছর দেখানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে জালাল উদ্দীনের জাতীয় পরিচিয় পত্র অনুযায়ী সেসময়ে তার বয়স ছিল ৬৫ বছর। জালাল উদ্দীন ২০০৯ সালে গ্যাস সংযোগের সময়ও আশরাফুল জমির মালিকানা নিয়ে কোন প্রকার দাবি তোলেননি। বিবাদী আশরাফুলের দলিলটি ভুয়া, জালিয়াতিপূর্ণ এবং অসংখ্য গড়মিল রয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, আশরাফুল ইসলাম তার দাবিকৃত সম্পত্তির বিষয়ে বাদী পক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়নি।
বাদী রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আশরাফুল ইসলাম তাদেরকে গুম-খুন, হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির মাধ্যমে নানান ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।এবিষয়ে বাদী পক্ষ ও তার পরিবার বিজ্ঞ আদালত এবং প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচারের আশাবাদী।
এ বিষয়ে আশরাফুল ইসলাম খানের সাথে বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।