বিতর্কিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সমালোচিত মুখ আশরাফুল আলম ওরফে ‘হিরো আলম’ আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে (২৮ জুন) বগুড়ার ধুনট উপজেলায় এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৬ বছর। তার আকস্মিক মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গভীর রাতে হিরো আলম তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নাট্যকর্মী জাহিদ হাসান সাগরের বাড়িতে যান। ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী ভান্ডারবাড়ি গ্রামে অবস্থিত ওই বাড়িতে বন্ধু সাগরের সঙ্গে তিনি দীর্ঘ সময় কাটান। তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে রিয়া মণি নামে এক তরুণীকে নিয়ে হতাশার কথা বলেন হিরো আলম। আলাপ শেষে রাত প্রায় ৩টার দিকে তারা দুজন আলাদা কক্ষে ঘুমাতে যান।
শুক্রবার সকালে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও হিরো আলম ঘুম থেকে না ওঠায় তার বন্ধু জাহিদ হাসানের সন্দেহ হয়। তিনি হিরো আলমের কক্ষে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান এবং তার বালিশের পাশে ঘুমের ওষুধের খালি পাতা পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে দুপুর ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হিরো আলমের বন্ধু জাহিদ হাসান সাগর বলেন, “রিয়া মণিকে নিয়ে ও প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। এছাড়া মানুষের নানা ধরনের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও সমালোচনায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আমার ধারণা, এই সব হতাশা থেকেই সে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান প্রাথমিকভাবে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিরো আলমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার আলোচিত বান্ধবী রিয়া মণি হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে মৃত হিরো আলমের মাথা কোলে নিয়ে রিয়া মণি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
ধুনট থানা পুলিশ জানিয়েছে, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।