আরাকান অঞ্চলে নতুন করে যে প্রশাসন গঠিত হচ্ছে, তাতে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মাধ্যমে এ বার্তা সরাসরি আরাকান আর্মিকে জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা।
মঙ্গলবার (৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে আরাকান আর্মিকে জানিয়েছি, নতুন করে যেন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ না করে। যদি তারা এই অনুরোধ না মানে, তাহলে সেটিকে জাতিগত নিধনের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সংলাপ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।”
আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ নিয়ে মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়ার প্রসঙ্গে ড. খলিলুর বলেন, “বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমরা আমাদের স্বার্থে যার সঙ্গে প্রয়োজন, তার সঙ্গে কথা বলব। আমাদের নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি রয়েছে এবং আমরা সেটি বাস্তবায়ন করছি। মিয়ানমার যদিও আরাকান আর্মিকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে, তারাও কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।”
তিনি আরও বলেন, “সীমান্তের ওপারে এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ। সীমান্ত নিরাপদ রাখতে হলে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ প্রয়োজন। মিয়ানমার আর্মি যদি পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নেয়, তবে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করব— যেমন অতীতে করেছি।”
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্পর্ক নিয়ে ড. খলিল বলেন, “দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে যোগাযোগ রয়েছে। কিছু দিন আগে ভূমিকম্পে মিয়ানমারে আমরা সহযোগিতা পাঠিয়েছি, সেখানে মিয়ানমারের অনুরোধের অপেক্ষাও করিনি। কোনো সমস্যার সমাধান চাইলে সব পক্ষের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে হয়।”
মানবিক করিডোর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সকল পক্ষ সম্মত কি না, সেটি আমরা দেখব। তবে সম্মতি দিলেই যে আমরা সাহায্য পাঠাব— এমন নয়। এখানে আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রয়েছে। আমরা চাই, আরাকানের নতুন প্রশাসনে রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক। সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের যেন নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার না হতে হয় এবং তারা যেন দলে দলে বাংলাদেশে চলে না আসে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জাতিগত নিধন কোনোভাবেই বাংলাদেশ মেনে নেবে না।”