ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক উপদেষ্টা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য ‘মিথ্যাচার’।
তবে বঙ্গভবনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল বা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্যও আহ্বান জানানো হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে ১৯ অক্টোবর দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দাবি করেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। তবে এই বক্তব্য নিয়ে সরকার ও ছাত্রনেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটি মিথ্যাচার এবং ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।”
সরকারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য উপদেষ্টা পরিষদের আসন্ন বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। যুব, ক্রীড়া ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, “স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছিলেন, তবে ছাত্র-জনতার গণভবনের কাছাকাছি আসায় তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।”
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের আড়াই মাস পর রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যে স্ববিরোধিতা ও শপথ লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না থাকার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ্দীন মালিক। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতিকে ইমপিচ করার ক্ষমতা সংসদের। এখন সংসদ না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।”
বঙ্গভবন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার প্রশ্নে আপিল বিভাগের আদেশই চূড়ান্ত উত্তর।