মিয়ানমারে আটক ২৯ জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী থেকে বিভিন্ন সময়ে ধরে নিয়ে যাওয়া ২৯ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়া সংলগ্ন একদিনের ট্রানজিট জেটি ঘাট দিয়ে তাদের ফেরত আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।
ফেরত আসা জেলেদের পরিচয় এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে তাদের মধ্যে ১৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন, যারা টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করতেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের বেশিরভাগ এলাকা এখন আরাকান আর্মির দখলে। এর ফলে নাফ নদীতেও তাদের তৎপরতা বেড়েছে, যার কারণে বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে আটক জেলেদের মুক্তির প্রচেষ্টা চালানো হয়। দীর্ঘ আলোচনা ও প্রচেষ্টার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২৯ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয় বিজিবি।
এর আগে বিকালে বিজিবির একটি দল দুইটি কাঠের ট্রলারসহ মিয়ানমারের মংডু টাউন শিফে গিয়ে আটক জেলেদের আনতে রওনা দিয়েছিল। বিজিবি জানায়, ফেরত আসা জেলেদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং পরে তাদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ পরবর্তীতে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা নেবে।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত থেকে ছয় জেলেকে, ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদীর মোহনা থেকে চার জেলেকে এবং ২২ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ জেটি ঘাট থেকে ১৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল আরাকান আর্মি।
এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত এনেছিল বিজিবি। এছাড়া, গত ১৬ জানুয়ারি নাফ নদীর মোহনায় বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করা তিনটি পণ্যবাহী জাহাজও আটক করেছিল আরাকান আর্মি, যা পরবর্তী সময়ে মুক্তি দেওয়া হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, বিজিবির প্রচেষ্টায় ফেরত আসা জেলেদের মধ্যে ১৫ জন বাংলাদেশি এবং ১৪ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন, যারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিবিরে বসবাস করতেন।