বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ছিনতাই, ডাকাতি এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্য দিনদুপুরে সংঘটিত এ ধরনের ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতার প্রশ্ন তুলছে।
পুলিশের দাবি, পাঁচই অগাস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হামলা এবং বিভিন্ন সংঘর্ষের ফলে তাদের ওপর চাপ পড়েছে। এই পরিস্থিতির কারণে কেউ কেউ অপরাধ সংঘটনের সুযোগ নিয়েছে। তবে পুলিশ বাহিনী আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশের নৈতিক এবং মনোবল সংকটের কারণে অপরাধীরা সুযোগ পাচ্ছে। তারা মনে করেন, পুলিশ সদস্যরা বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ার ভয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে কিছুটা দ্বিধায় ভুগছেন। এতে অপরাধচক্রগুলো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রতিক অপরাধের ঘটনা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মোহাম্মদপুরের ঘটনায় দলবদ্ধভাবে তরুণদের আক্রমণ ও দোকানে অস্ত্রধারীদের ঢুকে পড়া, নোয়াখালীতে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, এবং বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা আইনশৃঙ্খলার অবনতির চিত্র তুলে ধরেছে।
যদিও সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, তবুও জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তারা পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে কবে নাগাদ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশের মনোবল পুনরুদ্ধার এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আরো সময় লাগবে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি কেবল পুলিশের সক্রিয় কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করছে না, বরং এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণগুলোকেও সমাধান করতে হবে।